আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় অনুলোম ও বিলোম সাধন।
অনুলোম ও বিলোম সাধন
প্রথমে মুদারা গ্রামের স্বর সাতটা অনুলোম গতিতে এক মাত্রানু সারে ধীরে ধীরে এক একটা করিয়া স্পষ্টরূপে পুনঃ পুনঃ সাধন করা উচিত। তদনন্তর ঐ সাতটা স্বর বিলোমভাবে সাধিতে হইবে। এইরূপে পৃথভাবে অনুলোম ও বিলোম-সাধন করিতে করিতে হস্তের জড়তা কিয়ৎপরিমাণে অপগত হইলে একেবারে অনুলোম ও বিলোম-সাধন করা কর্তব্য।
অনন্তর অনুলোম এবং বিলোমসাধনের উদাহরণ যেরূপ প্রদর্শিত হইবে, তৎসমুদয়ই মাত্রানুযায়িক পৃথকরূপে প্রথমে অনুলোম, পরে বিলোম, তৎপরে অনুলোম এবং বিলোম উভয়মিশ্রণে সাধনরীতি অবলম্বিত হইবে। প্রথম উদাহরণের সুরগুলি যতটুকু কাল অবলম্বন করিয়। সাধনা করিবে, পরে দ্বিমাত্রানুসারে যে সাধনগুলি লিখিত আছে, সেইগুলি উপরোক্ত কালের দ্বিগুণ কাল অবলম্বন করিয়া যথা- নিয়মে সাধন করিতে হইবে । ( ১ )
( ১ ) অধ্যাপক গোস্বামী মহাশয় বলেন, একমাত্র কাল গ্রহণ জন্য যুবা মনুষ্যের স্বাভাবিক নাড়ীর এক একটা আঘাত গৃহীত হইবে, তদনুসারেই মাত্রাকাল স্থির করা কৰ্ত্তব্য। শিক্ষাকালে যদি কোন শিক্ষক উপস্থিত থাকেন, স্বাভাবিক নাড়ীর গতির সহিত মাত্রাগ্রহণক’ল করতল দ্বারা দর্শাইয়া দিবেন, এবং পাদাঙ্গুলির মৃদু আঘাতদ্বারা ছাত্রদিগকে বাদনকালে যথানির্দিষ্ট মাত্রানুযায়িক কাল স্থির রাখিতে আদেশ করিবেন।
আর যত দিন সুরের নাম ও সুরের সারিকাগুলি বিশেষরূপে বোধ না হয়, তত দিন পর্যস্ত সেই সঙ্গে সুরগুলি মৃদুভাবে উচ্চারণ করিতে বিধি দিবেন। বাদনকালে পদাঙ্গুশির মৃদু আঘাতদ্বারা মাত্রা নির্দিষ্ট রাখা সকল সময়েই প্রয়োজনীয়। মাত্রার অন্যান্য বিবরণ সঙ্গীতসারে দ্রষ্টব্য।
স্বরসমূহের মধ্যে মধ্যে সমমাত্রা ব্যবধানে যে, এক একটা লম্বমান সরল রেখ। নির্দিষ্ট থাকে, তাহাদিগকে বিভাজক রেখা বলে। প্রত্যেক পদের মধ্যে মধ্যে এক একটা, পদবিশেষের শেষে দুইটা করিয়া বিভাজক রেখা নির্দ্দিষ্ট থাকিবে, আর এইরূপ ( ) পদ্ম চিহ্ন দ্বারা কোন গতাদির সম্পূর্ণতা বুঝাইবে।
অনুলোম সাধন
বিলোম-সাধন
অনুলোম সাধন
বিলোম-সাধন
অনুলোম সাধন
বিলোম-সাধন
অনুলোম সাধন
বিলোম-সাধন
অনুলোম ও বিলোম সাধন
অনুলোম ও বিলোম সাধন
অনুলোম ও বিলোম সাধন
অনুলোম ও বিলোম-সাধন
অনুলোম ও বিলোম-সাধন
অনুলোম ও বিলোম-সাধন
অনুলোম ও বিলোম-সাধন
অনুলোম সাধন
বিলোম সাধন
যে সকল সাধন পূর্ব্বে সাধিত হইল, সে সমুদয়গুলি মুদারার, অর্থাৎ মধ্য সপ্তকের। এক্ষণে যথানিয়মে উদারা সপ্তক সাধন করা কর্তব্য। মুদারা সপ্তকে যে সাতটী স্থর নির্দিষ্ট আছে, উদারা সপ্তকেও সেই সাত সুর ভিন্ন অপর আর কিছুই নাই, কেবল স্থানগত ভেদজন্য স্বরের নিম্নতা ও উচ্চতা নিবন্ধন পরস্পরকে ভিন্ন বলিয়া বোধ হইয়া থাকে, বাস্তবিক উভয়ে পৃথক্ নহে এবং তারা সপ্তকেও ঐরূপ জানিবে। বস্তুতঃ সাতটী সুরের অধিক প্রকৃত স্বর কখনই হয় না ( ১ ) ।
সাত সুরের অধিক আটটা করিতে গেলে পূর্ব্ব সপ্তকের বড়জের সহিত মিলিয়া যায়, এত দ্বিষয়ক অনেক প্রমাণ ইংরাজী ধ্বনিবিৎ পণ্ডিতেরাও প্রদর্শন করিয়া- ছেন। তাঁহারা বলেন, এক সেকেণ্ড অথবা ১ মাত্রাকালমধ্যে ৩২ বার ভাইব্রেসন্ (Vibration. ) অর্থাৎ কম্পন বা অনুরণন ব্যতীত একটী স্বর অর্থাৎ সঙ্গীতধ্বনি নিষ্পন্ন হয় না।
স্বরগ্রাম বা সপ্তকের প্রসূতির স্বরূপ বাইশটী শ্রুতি পূর্ব্বে নির্দ্দিষ্ট হইয়াছে। সংস্কৃতসঙ্গীত গ্রন্থকর্তারা বলেন যে, ষড়ঙ্গে চারিটী, ঋষভে তিনটী, গান্ধারে হুইটা, মধ্যমে চারিটী, পঞ্চমে চারিটী, ধৈবতে তিনটী ও নিষাদে দুইটী শ্রুতি পাওয়া যায়। ষড়ঙ্গ হইতে আরম্ভ করিয়া নিষাদ পর্য্যন্ত যে কয়েকটা সুরের নাম উল্লেখ করা গেল, ঐ কয়েকটা সুরেই দ্বাবিংশতিশ্রুতিসম্ভূত একটী পূর্ণ স্বরগ্রাম হয়।
আরও দেখুনঃ

